করণীয়-1
মোবাইল নম্বর নিশ্চয়ই এতদিনে আদান-প্রদান হয়ে গেছে! এটা খুবই জরুরি। বিয়ের আগে অনেককিছুই ফিক্স করা যাবে মোবাইলের মাধ্যমে। মানসিক-শারীরিক অনেক বিষয় আলোচনায় আসবে, যা বিয়ে-পরবর্তী জীবনের জন্য খুব প্রয়োজনীয়। (অপশনাল) বিয়ের তারিখ ঠিক করা নিয়ে একটু বলি। অনেকেই বিয়ের রাতে আবিষ্কার করে যে তার নববধূর পিরিয়ড চলছে! সো এতদিনের “প্রথম রাইতে বিলাই মারা”র প্ল্যান কুপোকাত! এটা যদিও খুব জরুরি কোন বিষয় না, পিরিয়ড শেষ হয়ে যাবে সর্বোচ্চ ৩-৪ দিনের মধ্যে। তারপর প্ল্যানমাফিক… তবে মেয়ে বা আত্মীয়াদের মধ্যে কারও সাথে যদি ফ্রি থাকেন তবে একটা ট্রাই করা যেতে পারে! যেমন : আপনার ভাবী আছে, তাকে বলুন যেনো বিয়ের সময় মেয়ের কোন শারীরিক সমস্যা না থাকে। ভাবীরা এই লাইনে “আকেলমন্দ”, তাই ইশারা বুঝে ঠিকই হবুবধূকে পরবর্তী পিরিয়ডের তারিখ জিজ্ঞেস করে সেভাবে বিয়ের তারিখ নির্ধারণে ভূমিকা রাখতে পারেন। তারপরেও অনেকসময় বিয়ের টেনশনে অনেক মেয়ের অসময়ে পিরিয়ড শুরু হয়ে যেতে পারে। তাই আবারও বলছি, এটা বড় কোনো ইস্যু না।
করণীয়-২
হবুবধূর সাথে ফ্রি হয়ে নিন। টেলিফোনে আলাপ যেহেতু শুরু হয়ে গেছে। এইবার তার সাথে শারীরিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ শুরু করুন। তবে রয়ে-সয়ে। সরাসরি প্রথম ১-২ দিনেই শুরু করলে কিন্তু বিপদ। কীভাবে শুরু করবেন নিজেই চিন্তা করুন। মনে রাখবেন, এই আধুনিক যুগে মেয়েরা কিন্তু সবই জানে। জানার সোর্স আপনার মতই। এটাকে নেগেটিভলি দেখার কিছু নাই। বরং পজেটিভলি দেখুন, ভাবুন তার এই জানা আপনার কাজকে সহজ করে দেবে। তবে মেয়েরা জানলেও প্রকাশ করবে না, কারণ তার মনে ভয় কাজ করবে যে আপনি তাকে ভুল বুঝতে পারেন। তাই প্রথম স্টেপ আপনি নিন। জানা বিষয় নিয়ে আলাপ শুরু করুন, তবে তত্ত্বীয় বিষয়গুলি।
করণীয়-৩
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকুন ও শক্তিশালী হোন। না, কোনো বটিকা বা সালসা খাওয়ার কথা বলবো না। স্রেফ মধু খান প্রতিদিন এক চামচ করে। দুধে মিশিয়ে খেলে আরও ভালো। আর স্বাভাবিক খাবারতো খাবেনই। ভুড়িটাকে বেশি বাড়তে দেবেন না প্লিজ। বাসররাতে ফার্স্ট ইম্প্রেশনটা খারাপ হয়ে যাবে তাহলে। আর প্রচুর পানি খান। চেহারা ফ্রেশ থাকবে। পরর্বতী পর্বে আলাপ হবে সরাসরি বাসররাতের প্রস্তুতি নিয়ে। কী কী কিনতে হবে, আর সাথে রাখতে হবে।
করণীয়-৪
লুব্রিকেন্ট বা জেল কিনে রাখুন। ভালো কোনো ফার্মেসি থেকে লুব্রিকেন্ট কিনে রাখুন। বন্ধুরাও অনেক সময় গিফট দেয়, কিন্তু সে আশায় বসে থাকলে বিপদ। এই লুব্রিকেন্ট বলতে গাড়ির লুব্রিকেন্ট বুঝানো হয় নি। এটা সার্জিক্যাল জেল। ভালো মানের একটা লুব্রিকেন্টের নাম বলি। জনসন এন্ড জনসনের “KY Gelly”। বড় ফার্মেসিগুলিতে পাবেন, KY Gelly বললেই দেবে। আর এক টিউব দিয়ে দশ-বারোজন বন্ধুর সংসার শুরু হয়ে যাবে! কারণ একজনের বেশি লাগে না। এই সার্জিকেল জেল না পেয়ে অনেকে নারিকেল তেল, গ্লিসারিন ইত্যাদি ব্যবহার করে। এ দুটোই কিন্তু রাফ, এমনকি কনডম ফেটে যেতে পারে। গ্লিসারিন কখনও র’ অবস্থায় ইউজ করবেন না। পানি মিশিয়ে ব্যবহার করুন। তবে গ্লিসারিনের ব্যবহার সাধারণত নিরুৎসাহিত করা হয়। কেন ও কীভাবে ব্যবহার করবেন : আমরা সবাই কম-বেশি জানি যে অনাঘ্রাতা (ভার্জিন) মেয়েদের যৌনাঙ্গের প্রবেশপথটা খুব সরু থাকে। অর্থ্যাৎ চাইলেই সহজে সেখানে আপনার পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করবে না। এর সাথে আছে হাইমেন বা সতীচ্ছেদ বা পর্দার প্রতিরোধ। তাই প্রথমদিকে প্রবেশ করাতে ব্যর্থ হয়ে অনেক হতাশ হয়ে পড়ে। এটা নিয়ে টেনশন না করে আপনি প্রথমে আপনার অ্যাসাইনমেন্ট ঠিক করুন ‘প্রবেশ করাতে হবে’। এই সরু পথে জোর করেই প্রবেশ করতে হবে, জোর করা মানেই শক্তি প্রয়োগ, এবং স্বাভাবিকভাবেই এতে আপনার সঙ্গিনী ব্যথা পাবে। তাই শক্তি প্রয়োগটা গোঁয়াড়ের মত না করে ভালোবাসার সাথে করুন। দু’স্থানেই জেল লাগিয়ে এবার চেষ্টা করুন, একদিনে না হলে দুইদিনে হবে। আরও এক-দু’দিন বেশি লাগলেও পরিশ্রম কমবে, দুঃশ্চিন্তা কমবে, ব্যথা কম পাবে, শুরু করা যাবে তাড়াতাড়ি। কিছু ভুল ধারণা : প্রথমতঃ অনেকে প্রথম প্রবেশের সময় নববধূর কুমারিত্বের পরীক্ষা নেওয়ার ইচ্ছাও মনে মনে পোষণ করে। ভুলেও এ কাজ করবেন না। একটা প্রচলিত ধারণা আছে কুমারী বা অনাঘ্রাতা মেয়ে মানেই সতীচ্ছেদ বা হাইমেন থাকবে, তাই স্বামীই সেটা বিদীর্ণ করে ‘বউনি’ করবে। এটা এই যুগে হাস্যকর। সাইকেল চড়লে, দৌড়াদৌড়িতে, খেলাধুলা করলে হাইমেন ফেটে যাবেই, তাই সেটা ন্যাচারাল, স্বামীকে দায়িত্ব নিতে হবে না! কেউ হাইমেনের উপস্থিতি না পেলে আবার নববধূ সম্বন্ধে খারাপ ধারণা করে বসে থাকবেন না। দ্বিতীয়তঃ আর একটা ভুল ধারণা হলো – রক্তপাত না হলে মেয়ে কুমারী না। এটা বিশ্বাস করা মূর্খতার সামিল। যদি হাইমেন ফেটে গিয়ে থাকে আগেই, বা আপনি যদি লুব্রিকেন্ট ইউজ করেন তবে অনেক সময়ই রক্তপাত নাও হতে পারে। তাই এসব কোনো মানদণ্ড না। তৃতীয়তঃ বিভিন্ন পর্নো কাহিনী পড়ে অনেকের ধারণা হয় যে সেক্স করার সময় যোনিপথ পিচ্ছিল কামরসে ভেজা থাকবে, তাই উঠো… যাতো, আলাদা লুব্রিকেন্ট ইউজের প্রয়োজন নেই। আসলে ব্যাপারটা তা না। এই ফ্লুইডটা বের হবে উত্তেজিত হলেই। আর নতুন নতুন বাবা-মাকে ছেড়ে আসা ভয়-শঙ্কা-লজ্জায় থাকা একটা মেয়ের পক্ষে উত্তেজিত হওয়া এত সহজ না। এমনকি অনেকে তো প্রথম প্রথম কোনো অনুভূতিই পায় না। তাই ফ্লুইড না বের হলে ভয়ের কিছু নেই, সময় নিন কয়েকদিন, এমনিই ঠিক হয়ে যাবে। চতুর্থতঃ স্তনের স্থিতিস্থাপকতা ও কোমলতা দেখেও অনেকে টাচড-আনটাচড কন্ডিশন বের করতে চান। শক্ত-টানটান হলে নাকি আনটাচড। এটা সবচে বড় বোকামি। আমাদের মেয়েরা এমনিতেই শারীরিকভাবে নরম প্রকৃতির। তাই স্তনও নরম হতে পারে। মুভির নায়িকার টান-টান বুক বউয়ের কাছে আশা করবেন না, কারণ বুক টানটান রাখতে শোবিজের লোকেরা অনেক টাকা খরচ করে, কসরত করে। আপনি নায়িকার যে টাইট স্তনযুগল দেখছেন তা মূলত ফোম-ব্রা’র কল্যাণে! পঞ্চমতঃটিনএজ থেকেই হস্তমৈথুনে অভ্যস্ত ছেলেরা অনেক সময় বিয়ের করতে ভয় পায়। মঘা-ইউনানীর লিফলেট পড়ে আবিষ্কার করে তার ‘আগা মোটা গোড়া চিকন’, তাই তাকে দিয়ে স্ত্রীকে সুখ দেওয়া সম্ভব হবে না! এটা নির্মম রসিকতা। এসব নিয়ে টেনশন না করে লাফ দিয়ে নেমে যান বিয়ে করতে। এত মানুষ দেখেন আশেপাশে সবাই কি ধোয়া-তুলসি পাতা? সবাই অনাঘ্রাতা বউই চাই আমরা। আর নিজে যদি অভিজ্ঞতাহীন হই, তবে একই আশা করবো নববধূর কাছ থেকে। সর্বোপরি কারও যদি সন্দেহপ্রবণ মন থাকে, তবে সব কিছু ক্লিয়ার হয়ে নেওয়া উচিত আগেই। এনগেজমেন্ট বা বিয়ের আগেই মেয়ে সম্বন্ধে সব খোঁজ-খবর নিয়ে নিন। বিয়ের পর আর এসব নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। মনে রাখবেন, সন্দেহের পোকা একবার মনে ঢুকলে সেখানেই বাসা বেঁধে বসে যাবে। তাই আগে থেকেই সব ক্লিয়ার হোন। বিয়ের পর নো টেনশন আগের ব্যাপার নিয়ে। ভালবাসতে শুরু করুন যেভাবে পেয়েছেন সে অবস্থা থেকেই।
করণীয়-৫
আত্মবিশ্বাসী হোন, অযথা ডাক্তারের কাছে দৌড়াবেন না। টিন-এজে স্বমেহনের কারণে অনেকেই অপরাধবোধে ভোগে, মনে শঙ্কা তৈরি হয় শারীরিক ভালোবাসায় পারঙ্গমতা দেখাতে পারবে কি-না। অনেকে দৌড়ায় ডাক্তারের কাছে। ডাক্তারের কাছে যাওয়া যাবে না, তা নয়। তবে যদি নিজের দৈহিক সুস্থতা থাকে আর পুরুষাঙ্গের প্রাত্যহিক উত্থান (সকালে, যাকে ‘মর্নিং গ্লোরি’ বলা হয়।) হয়, তবে ভয়ের কিছু নেই! ডাক্তারের কাছে যাওয়ার রিস্ক হচ্ছে অনেকে এই সুযোগে টু-পাইস কামানোর ধান্ধায় আপনার উল্টো ক্ষতি করে দিতে পারে। অনেকে আবার মঘা-ইউনানীর মতো ভণ্ডের কাছে যান। তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে একটা বিষয় আমলে আনা হয় না, সেটা হলো ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা ইউরিন ইনফেকশন। ইউরিন ইনফেকশন হয় কিছু ব্যাকটেরিয়ার কারণে, এবং পুরুষরা এটাতে আক্রান্ত হয় টয়লেট ব্যবহারের মাধ্যমে। পুরুষদের সবাইকে কম-বেশি পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, অফিসের টয়লেটকেও পাবলিক টয়লেট হিসেবে ট্রিট করুন এখানে। এসব টয়লেট নানা ধরনের মানুষ ব্যবহার করে। এবং অনেক টয়লেটেই পানির সুব্যবস্থা থাকে না। এদের মধ্যে কারও যদি ইনফেকশন থেকে থাকে তবে সে টয়লেট ব্যবহারের পর ভালোভাবে পানি না দিয়ে গেলে, বা নতুন ব্যবহারকারী পানি দিয়ে ফ্লাশ না করে ব্যবহার করলে প্যানে থাকা ব্যাক্টেরিয়া আক্রমণ করে। এভাবেই পানি ব্যবহার না করলে ইনফেকশন হয়। এটা একটা ‘যৌনবাহিত রোগ (STD)’, এবং স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রীরা এটা পেয়ে থাকে। তাই যদি আপনি প্রসাবে জ্বালাপোড়া বা পেইন অনুভব করেন তবে বিয়ের আগেই একবার টেস্ট করুন, থাকলে ব্যবস্থা নিন। মনে রাখবেন আপনার স্ত্রী আক্রান্ত হলে প্রেগন্যান্সির সময় এটা এক্সট্রা টেনশন যোগ করবে। হাই-অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে তখন।
করণীয়-৬
যৌনমিলনের সেফ পিরিয়ড – নিজে জানুন, হবুবধূকে জানান। সেফ পিরিয়ড মানে যে সময় কোনো প্রতিরোধক (কনডম বা এ জাতীয় কিছু) ছাড়াই দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবেন, এক্সিডেন্টালি প্রেগন্যান্ট হওয়ার ভয় থাকবে না। এটা অনেকেই জানেন, আবার একটু রিভাইস করে নিই। মেয়েদের রজঃচক্র বা পিরিয়ডের সাথে সেফ-পিরিয়ডের সম্পর্ক। ধরলাম কোনো মেয়ের পিরিয়ড হয় ৩০ দিন পর পর (কম বেশিও হতে পারে) এবং এই মাসে তার পিরিয়ড শুরু হয়েছিলো ১ তারিখে। তার আগের মাসেও ১ তারিখে। এটাকে এক সাইকেল বলা হয়। সাধারণও ওভুলেশন হয় সাইকেলের মাঝামাঝি সময়ে, ধরলাম ১৪ দিনে। তাহলে ১৪ তারিখে ওভুলেশন হচ্ছে। এই ওভুলেশনের হওয়ার আগের এক সপ্তাহ ও পরের এক সপ্তাহ ফার্টাইল বা উর্বর সময়। এ সময়ে প্রোটেকশন না নিলে প্রেগন্যান্ট হবেই। তাহলে মাসের ৭ তারিখ থেকে ২১ তারিখ প্রটেকশন ছাড়া এগোনো যাবে না। বাকি সময় সেফ, থিওরিটিক্যালি কোনো প্রটেকশনের দরকার নেই। এটা ন্যাচারাল পদ্ধতি, তবে সমস্যা হলো পিরিয়ডের তারিখ বিয়ের পর বদল হতে দেখা যায়। এবং অনেকের ক্ষেত্রে সাইকেলটাও স্ট্যাবল থাকে না। তাই সাইকেল স্ট্যাবল না হওয়া পর্যন্ত প্রটেকশন নেওয়াই উচিত। যদি দ্রুত বাচ্চা নেওয়ার প্ল্যান না থাকে তাহলে প্রটেকশন নিয়েই শুরু করতে হবে। নো হাঙ্কিপাঙ্কি! তবে প্রথম বাচ্চা হবার আগে আপনার স্ত্রীকে বার্থকন্ট্রোল পিল খাওয়ানোই ভালো। এটা স্বাভাবিক ডেলিভারিতে সমস্যা তৈরি করে থাকে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
করণীয়-৭
জানুন, প্রি-ম্যাচ্যুর ইজাকুলেশন কী? প্রি-ম্যাচুর ইজাক্যুলেশন মানে খুব দ্রুত বা সময়ের আগেই বীর্যপাত। সময়ের আগে মানে পার্টনারের অর্গাজমের আগেই, আর দ্রুত সময় মানে ১.৫ মিনিটের কম সময়ের মধ্যে। অধিকাংশ পুরুষই (৯০-৯৫%) জীবনের প্রথম যৌনাভিজ্ঞতায় প্রি-ম্যাচুর ইজাকুলেশনের সম্মুখীন হয়। প্রথম দিকে এটা নরমাল, এবং সময়ের সাথে সাথে এটা ঠিক হয়ে যায়। কেন হয়? প্রথমেই দুটো কারণ আসবে, অনভিজ্ঞতা ও অতিরিক্ত উত্তেজনা। অনভিজ্ঞ একজন পুরুষ তার প্রথম সেক্সের সময় প্রচণ্ড উত্তেজিত থাকে। উত্তেজিত অবস্থায় নারী সঙ্গীর সাথে শারীরিক খেলায় মেতে উঠার সময় থাকে তাড়াহুড়ার মধ্যে, অল্পসময়ে বেশি পথ বিচরণের চেষ্টায় নিজের উপর কন্ট্রোল থাকে না। সেই সঙ্গে লিঙ্গ প্রবেশ করানোর পর যোনীর ভেতরের উচ্চ উষ্ণতায় অনেকেই দিশেহারা হয়ে যায় অনেকসময়ই। আর এর ফলাফল হচ্ছে – খুব অল্প সময়েই নারী সঙ্গীর অরগাজম হবার আগেই বীর্যপাত। দ্বিতীয় কারণ হিসেবে আসবে ‘টেনশন’। নতুন বিয়ে বা সম্পর্কে নিজেকে শারীরিকভাবে সামর্থ্যবান হিসেবে তুলে ধরতে চাওয়ার মানসিক চাপ থেকে সৃষ্টি হয় টেনশন, ফলে নিজের উপর কন্ট্রোল থাকে না। তৃতীয় কারণ হলো, ‘সঙ্গিনীর তৈরি না হওয়া’। প্রথমদিকে শান্ত ও ধীরস্থিরভাবে সঙ্গিনীকে উত্তেজিত করার কাজটা অধিকাংশ পুরুষই করে না। ধরে নেয় তার নিজের মতোই তার সঙ্গিনীও উত্তেজিত হবে। ঘটনা আসলে উল্টো। মেয়েদের উত্তেজিত হতে পুরুষদের চেয়ে বেশি সময় লাগে। তাই সে তৈরি হবার আগেই পুরুষ সঙ্গী উত্তেজনার চরমে পৌঁছে যায়। ফলাফল অকাল বীর্যপাত! সমাধান : অনভিজ্ঞতার সমস্যা সমাধানের দরকার নেই, এই খেলায় অভিজ্ঞতা কাম্য নয়। বাকি থাকলো অধিক উত্তেজনা ও টেনশন। নতুন বিয়ে, প্রথমবার কাছে পাওয়া, উত্তেজনা তো থাকবেই। এটা আপনার উপর এখন, অধিকাংশ পুরুষই উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, যদি আপনি পারেন তাহলে ‘স্যালুট’। না পারলে কোনো সমস্যা নেই! আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছেন এটা পেপারে বা টিভিতেও খবর হিসেবে আসবে না। তাই যা স্বাভাবিক তাই হোক। টেনশন কীভাবে দূর করবেন? প্রথমেই ভাবুন আপনাকে কি আপনার সঙ্গিনীর সামনে নিজেকে বিশাল কিছু একটা কিংবা প্রচণ্ড সামর্থ্যবান প্রমাণ করতে হবেই? নাকি স্বাভাবিক একজন মানুষ হিসেবে থাকলেই চলবে? যা-ই করুন না কেন, আপনার স্ত্রী আপনারই থাকবে। সুপারম্যানের প্রতি মুগ্ধতা থাকে, ভালোবাসা থাকে না, আপনি সুপারম্যান হতে চাচ্ছেন কি-না নিজেই ভাবুন। আর ‘সঙ্গিনীর তৈরি না হওয়া’র দোষটা পুরোপুরি পুরুষের উপর বর্তায় না। পুরুষকে ধৈর্য ধরে স্ত্রীকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করতে হবে, শরীরের স্পর্শকাতর অংশগুলোতে কোমলভাবে স্পর্শ করে বা ঘষে, কিস করে… ব্যাকনেক, কানের আশে-পাশে, ঠোট-জিহবা, স্তন-নিপল, তলপেট-নাভী, যৌনাঙ্গ-উরু, হাত-পায়ের আঙ্গুল ইত্যাদি স্পর্শকাতর স্থান বলে পরিচিত। স্ত্রীর নিজেরও দায়িত্ব থাকে এ চেষ্টায় সাড়া দেওয়ার। কারণ এক হাতে তালি বাজে না!
বীর্যপাত দীর্ঘায়িত করতে চাইলে সমাধান…
১। প্রথমেই বলে রাখি, এর কোনো সরাসরি স্বীকৃত ওষুধ নেই। তাই বাজারে প্রচলিত ওষুধ না খাওয়াই ভালো।
২। একটা কার্যকর এক্সারসাইজ আছে। এখন থেকেই নিজের বীর্যপাত ঠেকিয়ে রাখার প্র্যাকটিস করতে পারেন। আমরা যেভাবে প্রস্রাব আটকাই, সেভাবে ডেইলি বিভিন্ন সময় একটানা ১০ বার প্রস্রাব আটকানোর কসরত করুন। যখন সময় পাবেন। প্রস্রাব না ধরলেও করুন।
৩। যখনই চরম মুহূর্ত আসবে মনে হয়, তার আগেই থেমে গিয়ে পুরুষাঙ্গ বের করে নিন, প্রস্রাব আটকানোর মত করে বীর্যপাত আটকান।
৪। বীর্যপাত আটকানোর সাথে সাথে দীর্ঘায়িত করার জন্য অন্য কিছু চিন্তা করতে পারেন, এতে উত্তেজনা ডাইভার্ট হবে কিছুক্ষণের জন্য।
৫। আর একটা পদ্ধতি হলো, আগেই একবার বীর্যপাত ঘটানো। এটা নিজে করে নিতে পারেন, অথবা সঙ্গিনী যদি হেল্পফুল হয় তবে সে-ই হাত দিয়ে সাহায্য করবে। তবে এই পদ্ধতি জনপ্রিয় না। অনেকেই আগাম দুর্বল হতে চায় না।
৬। কনডমের ব্যবহার কিছুটা হেল্প করে সংবেদনশীলতা কমাতে, তাই উত্তেজনাও কিছুটা কমানো যায়।
৭। কর্পুর-থেরাপি কাজে দিতে পারে। লিঙ্গ প্রবেশের আগে তার মাথায় একটু কর্পুর লাগিয়ে নিতে পারেন। এতে করে বীর্যপাত দীর্ঘায়িত হতে পারে। বাজারে কিছু কনডম পাওয়া যায় যেগুলোর ভেতরেকর্পুর থাকে। যেমন : ইউ&মি কনডম।
৮। মধু অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সঙ্গম শুরুর আধাঘণ্টা আগে কুসুম কুসুম গরম পানিতে দু-তিন চামচ খাঁটি মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
৯। ভালোমানের খেঁজুর কিংবা মিষ্টিও বীর্যপাত বিলম্বিত করে।সঙ্গম শুরুর আধাঘণ্টা আগে কিছু খেঁজুর কিংবা দু-তিনটি ভালোমানের মিষ্টি (স্পঞ্জজাতীয় নয়, যেগুলো খুব মিষ্টি তা খেতে হবে) খেয়ে নিলে ভালো ফল পাবেন।
১০। দেশি মুরগির ডিম কিংবা হাঁসের ডিমও বেশ ভালো কাজ দেয়। সঙ্গম শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে অর্ধসেদ্ধ দু-একটি ডিম খেয়ে নিতে পারেন। স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা হলেও উপকার অবশ্যই পাবেন!
করণীয়-৭
কনডম সম্বন্ধে জানুন। বাজারে অনেক ব্র্যান্ডের কনডম প্রচলিত আছে। সম্ভবত দেশে সবচে বেশি চলে সেনসেশন। এছাড়াও ইউ&মি, প্যান্থার, ল্যাটেক্স, টাইটানিক, ডুরেক্স, রাজাও ব্যবহৃত হয়। সেনসেশনসহ সব ব্র্যান্ডেরই কম বেশি নানা টাইপ/ফিচারড কনডম বাজারে পাওয়া যায়। যেমন : ডটেড, এক্সট্রা রিবড, সেন্টেড, প্লেইন, থিন, এক্সট্রা থিন, কন্ট্যুরড, লংলাস্টিং, ডটেড প্লাস রিবড, এক্সট্রা লং ইত্যাদি। এগুলি একেকটা একেক সময়ে/পর্যায়ে কার্যকর। সব সবার জন্য না, সব সময়ের জন্যও না। এক নতুন ব্যবহকারীর ক্ষেত্রে প্লেন অথবা ডটেড কনডম শুরু করার জন্য আদর্শ। অর্থ্যাৎ জাস্ট প্রটেকশনের জন্য। এক্সট্রা ফিচারড কনডমগুলি শুরুতে ব্যবহার না করাই ভালো, এতে প্রথমেই এক্সট্রা ফিচারডে অভ্যাস হয়ে গেলে কনডম ছাড়া বা সাধারণত সেক্স ততটা ভালো লাগবে না। এই কনডমগুলি সময়ের সাথে সাথে যৌনজীবনে বৈচিত্র্যতা আনার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। যেভাবে কনডম ব্যবহার করবেন : এটা খুব কঠিন কিছু না। কনডমের প্যাকেটে লেখা থাকে ইন্সট্রাকশন। ফলো করলেই হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন ভেতরে কোনো বাতাস না থাকে, তাই কনডমের মাথাটা চেপে ধরে কনডম পড়তে হয়। বাতাস থাকলে সেক্সের সময় কনডম ফেটে যেতে পারে, তাতে প্রটেকশনের কাজ আর হলো না। এ ছাড়া ভেতরে বাতাস থাকলে আপনার অস্বস্তিও লাগবে।
করণীয়-৮
রোমান্টিক হোন, চিন্তা-চেতনায় বৈচিত্র্য আনুন। বিয়েটা শুধু সামাজিক ও ধর্মীয়ভাবে শারীরিক মিলনের অনুমোদন না, মনের মিলনের অনুমোদনও। ভালোবাসার এমন সহজ সুযোগ আর কোনো সিস্টেমে নেই। তাই ভালোবাসুন, সুযোগটা কাজে লাগান। শরীরকে শুধু প্রাধান্য না দিয়ে মনের কথাও ভাবুন। একটা মানুষ সব ছেড়ে আপনার কাছে আসছে, এটা অনুভব করার চেষ্টা করুন, দেখবেন মনটা তার জন্য এমনিতেও নরম হয়ে আসছে। রোমান্টিক হোন, কবিতা পড়ুন, দু’একটা তার সামনে কোট করুন, রোমান্টিক গান শুনুন। গুনগুন করে গাইতে চেষ্টা করুন। বিয়ের পরে বাসরঘরে প্রবেশের সময় যেন সানাই বাজে সেই ব্যবস্থা করুন। রুমে ফুল রাখুন, হালকা সুগন্ধি ব্যবহার করুন, ডিমলাইট ব্যবহার করুন রাতে। কেয়ার করুন প্রথমদিন থেকেই, তাই বলে দৃষ্টিকটূভাবে পিছু পিছু ঘুরে বেড়িয়ে তাকে সবার সামনে অস্বস্তিতে ফেলবেন না। ব্যালান্স রাখার চেষ্টা করুন। একলা থাকার অনুভূতিটা প্রথম কয়েকদিন যেন না পায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। বাইরে যাচ্ছেন, সে তৈরি হলো, বলে দিন, ‘খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে’। ন্যাকামি না করেই বলে দিন তার সৌন্দর্যে আপনার মুগ্ধতার কথা, প্রকাশ করুন ভালোবাসার কথা, তবে লাউডস্পিকারে না, একান্ত ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে। আর বাইরে যাওয়ার ৩-৫ ঘণ্টা আগে জানিয়ে দিন কখন বেরোতে চান, নিজে তাড়া দিন যেন তৈরি হয়। না হলে শাড়ি-গহনা পছন্দ করা, সাজগোজ করাতেই রাত হয়ে যাবে! শারীরিক মিলনের শুরুতেও ভালাবাসার প্রকাশ রাখুন, রোমান্টিকতা আগে, পড়ে পেরেক মারার কাজ! বাসররাতে রোমান্টিক আলাপ দিয়েই শুরু করুন, এরপর ভবিষ্যত স্বপ্ন আর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কথা, পারিবারিক বিভিন্ন রীতিনীতির কথা স্বাভাবিক টোনে বলে যান। জোর করার কিছু নেই, শুধু জানিয়ে দিন এসব দরকারি ব্যাপার। মন ভালো হলে সংসারের খারাপ চাইবে না সে। হানিমুনের জন্য এক্সট্রা কিছু টাকা আগেই আলাদা করে রাখুন। বিয়ের ডামাডোলে সব টাকাই খরচ হয়ে যায়, তাই সাবধান। খুনসুটি করুন, মজা করুন, নরমাল ও ১৮+ কৌতুকগুলি বলার জন্য একজন রেডিমেড শ্রোতা পেয়ে গেছেন, কাজে লাগান! তবে বোকার মতো নিজে অতীতে কী করেছেন, আপনি কত বাহাদুর তা একের পর এক না বলে গিয়ে তাকেও বলতে দিন। তার মজার কথাগুলি, বাবা-মা-ভাই-বোন-বন্ধু-বান্ধবী নিয়ে অভিজ্ঞতাগুলি বলার সুযোগ দিন। আপনি নিশ্চিত জেনে যাবেন তার পছন্দ-অপছন্দ-ভালো লাগা-দুর্বলতা। দুজন দুজনকে আবিষ্কার করুন। জীবন আপনাদেরই, ভালোভাবে আপনাদেরই শুরু করতে হবে। তাকে বিশ্বাস করুন ১০০%। চিন্তা-ভাবনায় বৈচিত্র্য আনুন। এটা আনন্দময় বিবাহিত জীবনের মূলমন্ত্র। বিবাহিত জীবনে অনেকসময়ই একঘেয়েমি চলে আসে। মন ও শরীর দুই ক্ষেত্রেই। বৈচিত্র্য আনুন দুই ক্ষেত্রেই। ঘুরতে যান, মুভি দেখুন। সেক্সের জন্য নানা রকম আসন ট্রাই করুন, নানা ধরনের কনডম ট্রাই করুন। অনেকসময় ভালো মানের পর্নো ছবিও যৌনজীবনে বৈচিত্র্য আনতে সাহায্য করে।
করণীয়-৯
এন্টাসিড/ইমোটিল/ফ্ল্যাটামিল/ইনো-সল্ট কিনে রাখুন। বিয়ে মানেই খাওয়া-দাওয়া, জোর করেই খাওয়াবে। তেল-মসলার রকমারী। পেট কিন্তু বিদ্রোহ করে বসতে পারে। বদহজম কমন একটা ব্যাপার। এই ক্ষেত্রে ইনো-সল্ট বা ফ্ল্যাটামিল খুব কাজে দেয়। মনে রাখবেন, পেটে শান্তি না থাকলে সেক্স করতেও ইচ্ছে করবে না। এসিডিটির প্রবলেম মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে, ব্যবস্থা নিন।
করণীয়-১০
মিষ্টি-ফল-দুধ-ডিম খান বেশি করে। সেক্সের পরেই মিষ্টি-মধু-দুধ-ডিম বা বিভিন্ন ধরনের ফল খান। প্রথম দিকে ক্লান্তিটা বেশি আসবে, তাই এসব শক্তিদায়ক খাবার সাথে রাখুন। পরে অভ্যাস হয়ে গেলে এতো কিছু লাগবে না। বিয়ের আগের কয়েকদিন অযথা রাত না জেগে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। অন্তত দিনে ৬ ঘণ্টা যেন পূরণ হয়। নতুন জীবন সুস্থ-সবলভাবে শুরু করুন। এর বাইরেও আর যদি আর কিছু জানার থাকে তবে প্রশ্ন করুন।
এ বিষয়ে আরও জানতে হলে আপনার যৌনজীবনকে আরও মধুর করতে!